বহিরাগত প্রার্থী মানছি না - তৃণমূলের প্রার্থী পরিবর্তনের ব‍্যানার ঘিরে আলোড়ন

23rd March 2021 11:01 pm বর্ধমান
বহিরাগত প্রার্থী মানছি না - তৃণমূলের প্রার্থী পরিবর্তনের ব‍্যানার ঘিরে আলোড়ন


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( জামালপুর ) : ‘ভূমিপুত্র’-কে প্রার্থী করার দাবি পুরণ হয়নি ।  তৃণমূল নেতৃত্ব পুর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভায় প্রার্থী করেছে ‘বগিরাগত’ অলোক মাঝিকে। তা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁষছিলেন জামালপুর বিধানসভার তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা।সেই ক্ষোভেরই বহিপ্রকাশ  মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা গেল জামালপুর  এলাকা জুড়ে ।“ ’বহিরাগত’ প্রার্থী অলোক মাঝিকে মানছি না মানবো না । জামালপুর বিধানসভায় ’ভূমিপুত্র’ প্রার্থী চাই “। এমন  ব্যানারে এখন ছয়লাপ জামালপুর। যা নিয়ে  
শোরগোল পড়ে গিয়েছে জামালপুরের রাজনৈতিক মহলে । এমন ঘটনায় অবশ্য বেজায় উৎফুল্ল বিজেপি শিবির ।তাঁদের বক্তব্য যারা ‘খেলা হবে’ শ্লোগানের জনক  তাঁরাই খেলা শুরু করে দিয়েছে।   তৃণমূল নেতৃত্ব বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী  তাঁদের প্রার্থীদের নাম ঘোষনার অনেক আগে থেকেই জামালপুরের তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা  ’ভূমিপুত্র ’প্রার্থীর দাবি করে চলেন। সেই সময়ে  জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন শ্রীমন্ত রায়।তাঁর অনুগতরা স্থানীয় ক্ষেত্রমোহন মাঝি অথবা অমল দলুই কে প্রার্থী করার দাবি তোলে । অপর পক্ষের নেতা তথা জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খানের  অনুগামীরা এলাকার উচ্চ শিক্ষিত ভূতনাথ মালিককে প্রার্থী করার দাবি দলের কাছে জানান । কুন্তু দলের নেতৃত্ব দুই পক্ষের দাবিকে
নস্যাৎ করে দিয়ে গলসি বিধানসভা থেকে  অলোক মাঝিকে তুলে এনে জামালপুর বিধানসভার প্রার্থী করেদেন । অলেক মাঝির নাম ঘোষনা হতেই মুষড়ে পড়েন মেহেমুদ খান ও তাঁর অনুগামীরা । তারা সদলবলে অলোক মাঝির উপরে গোসা করে বসে থাকেন । তবে  ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্রীমন্ত রায় দলীয় বাধ্যবাধকতা মেনে তাঁর অনুগতদের নিয়ে অলোক  মাঝির হয়ে ভোট প্রচারে নেমে পড়েন । কিন্তু পরিস্থিতির বদল ঘটে যায় এর কিছুদিন পরেই । মেহেমুদ খানের মানভঞ্জন  ঘটাতে  ভোটের মুখেই গত ১৫ মার্চ দল শ্রীমন্ত রায় কে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে মেহেমুদ খান কে সভাপতি করে দেয় । এরপর সব অভিমান দূরে সরিয়ে মেহেমুদ খান তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে অলোক মাঝির হয়ে ভোটের প্রচারে নেমে পড়লেও রাজনীতির ময়দান থেকে একেবারে ‘ভ্যানিস’ হয়ে যান শ্রীমন্ত রায় ও তাঁর অনুগামীরা । গত ৪ মার্চ সকাল থেকে জামালপুর যে ব্যানারে ছয়লাপ হয় তাতে লেখা ছিল,“ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করা না হলে ভোটের দিন সাপ লুডে খেলে দেবে জামালপুরের তৃণমূল কর্মীরা“ । আর এদিন যে ব্যানারে ফের ছয়লাপ জামালপুর তাতে লেখা রয়েছে ,“ ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই । ‘বহিরাগত’ প্রার্থী  অলোক মাঝিকে মানছি না ,মানব না”।   এদিনের ব্যানার প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী অলোক মাঝি বলেন ,“কারা কোথায় কি ব্যানার লাগাচ্ছে সেই বিষয়েটিতে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু দেখছি নি। এইসব বিরোধীদেরও কাজ হতে পারে ।দল আমায় জামালপুর বিধানসভায় প্রার্থী করেছে।জামালপুরের নেতা  ও কর্মীরা আমায় জেতানোর জন্য জোরদার লড়াইয়ে নেমে পড়েছে“ । সদ্য জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া মেহেমুদ খান এদিন বলেন ,“অলোক মাঝি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি মাত্র। রাজ্যের ২৯৪ টি আশনে আশলে লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী করর জন্য জামালপুরের তৃণমূল কর্মীরা লড়ছে । ব্যানার যারাই ঝোলাক কিছু লাভ হবে না । অলোক মাঝি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন“ । অপর দিকে শ্রীমন্ত রায় বলেন ,“দলে আমাকে যোগ্য মানতে না পরে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তাই এখন আমার কোন দায় নেই , দায়িত্বও নেই ।কোথায় কে কি ব্যানার- ফেস্টুন   ঝোলাচ্ছে সেই বিষয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দেখবে । আমার এখন ওইসব দেখার এক্তিয়ারও নেই“ ।  ভোটের মুখে জামালপুরে তৃণমূলের আভ্যন্তরিন লড়াই চরমে ওঠায় বেজায় উৎফুল্ল বিজেপি শিবির । জামালপুর বিধানসভার বিজেপি আহ্বায়ক জীতেন ডকাল বলেন ,তৃণমূলই ‘খেলা হবে ’শ্লোগানের জনক । জামালপুরে সেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর খেলা এখন জমে উঠেছে । এখন মনে হচ্ছে ভোটের দিন সত্যি সত্যি ওরা ‘সাপ লুডো’ খেলবে । জামালপুর বিধানসভার এবার পদ্ম ফুটছেই বলে জীতেন ডকাল এদিন দাবি করেছেন । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।